ফের রাজপথে পোশাক শ্রমিকরা
সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও ফের বিক্ষোভ শুরু করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। শনিবার রাজধানীর কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
অন্যদিকে এদিন সকালে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এসময় শ্রমিকরা যাত্রীবাহী বাসসহ ১৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।
স্থানীয়রা জানান, ভাষানটেকের তামান্না গার্মেন্টসের শ্রমিকরা সকালে সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করে।
ভাষানটেক থানার ওসি মুন্সি সাব্বির আহমেদ বলেন, শ্রমিকরা রাস্তা বন্ধ করার চেষ্টা করছে। তাদের বোঝানো হচ্ছে।
একই সময় শেওড়াপাড়ার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরাও সড়কে নেমে আসে। তাদের অবস্থানের কারণে রোকেয়া সরণিতে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
মিরপুর থানার ওসি দাদন ফকির বলেন, শ্রমিকদের শান্ত করতে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী চলতি জানুয়ারি মাস থেকে নতুন হারে বেতন দেয়া শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, নতুন কাঠামোয় বেতন প্রত্যাশা অনুযায়ী পাননি তারা। কারো কারো ক্ষেত্রে বেতন আগের চেয়ে কমে গেছে।
প্রাপ্য বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা সড়কে নেমে আসার পর নতুন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মজুরি কাঠামো পুনর্মূল্যায়নে একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি গত বৃহস্পতিবার প্রথম সভাও করেছে।
পোশাক শ্রমিকদের জন্য গত বছর ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামোর সাতটি গ্রেডের মধ্যে যে তিনটি গ্রেড নিয়ে আপত্তি এসেছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে সমন্বয়ের আশ্বাস দিয়েছেন কমিটির প্রধান শ্রম সচিব আফরোজা খান।
শ্রমিকদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, কোনো শ্রমিকের বেতনই কমবে না।
এদিকে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এসময় শ্রমিকরা যাত্রীবাহী বাসসহ ১৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়ার পরে ৯টার দিকে কারখানা থেকে বের হয়ে এসে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এসময় তারা দফায় দফায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে এবং যাত্রীবাহী বাসসহ ১৫টি গাড়ি ভাঙচুর করে।
ঘটনা চলাকালে প্রায় এক ঘণ্টা ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ তাদের সরাতে গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় ১০ শ্রমিক আহত হয়।
ঢাকা-১ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এসপি সানা সামিনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। ফের যেন তারা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করতে না পারে সেজন্য ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও ৮ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।